ইতিহাস ভূগোলের বাইরে ফেলে দেওয়া কোটি কোটি মানুষের কন্ঠে কলরব মনুষত্বের
কোলকাতার রাজপথে হাজারো উদ্বাস্তু নারী পুরুষ মতুয়াদের মহামিছিল বাংলাদেশে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে,মৌলবাদের বিরুদ্ধে,নাগরিকত্বের দাবিতে।শুধু কাকদ্বীপ থেকে এলেন দুহাজার মায়েরা।
পলাশ বিশ্বাস
নিখিল ভারতের কোলকাতায় ঐতিহাসিক সফল অভিযান ।দক্ষিণ বঙ্গের সুন্দরবন অন্চলের বিধবা সধবা হাজারো মা বোনেরা,মতুয়া অনুযায়ীদের মতুয়া মহাসঙঘ সহ বিভিন্ন সংগঠন,নানা উদ্বাস্তু ও দলিত সংগঠন,নমোশুদ্র বিকাস পরিষদ ও হাজারো আরো সংগঠনের মানুষ অরাজনৈতিক নিখিল ভারত উদ্বাস্তু সমন্বয় সমিতির নেতৃত্বে ও তত্বাধানে কোলকাতা র রাজপথ কাঁপিয়ে নূতন ইতিহাস সৃ্ষ্টি করল বাংলাদেশে সন্তাসের বিরুদ্ধে,মোলবাদের বিরুদ্ধে,ভারতবর্ষের সব রাজ্যে উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্বের দাবিতে মাতৃভাষা ও সংরক্ষণের দাবিতে,2003 সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল করার দাবিতে এবং সারা দেশে দলিত উত্পীড়নের বিরুদ্ধে।এই একতাবদ্ধ আন্দোলন আসামে,ত্রিপুরায় হালে হয়েছে।সেখানেও রাজধানীর রাজপথে নেমেছে হাজারো উদ্বাস্তু।17 আগস্ত দিল্লর রাজপথে এবং পর পর সব রাজ্যের রাজধানীতে এই আংনোদলন চলবে।
এদিন নিখিল ভারতের উদ্বাস্তু অধ্যক্ষ ড.সুবোধ বিশ্বাস,জেনারেল সেক্রেটারি সুপ্রিম কোর্টের উকিল অম্বিকা রায় ও রাজ্য নেতৃত্ব বাংলাদেশ হাই কমিশানে গিয়ে অবিলম্বে বাংলাদেশে সংখাসলঘু সমস্ত জনগোষ্ঠির নিরাপত্তারা দাবি তোলে,সথ্রু সম্পত্তি আইন বাতিল করে সংখ্যালঘুদের বেদখলি বন্ধ করার দাবির সঙ্গেই অবাধ হত্যালীলা,অবাধ ধর্ষন ও অবিপরাম উত্পীড়ন বন্ধ করার দাবিতেও মেমোরেন্ডাম দেওয়া হয়।
ওয়াই চ্যানেল অবস্থানে ড.সুবোধ বিশ্বাস,লোককবি অসিম সরকার,ডং.বিরাট বৈরাগ্য, ওড়ীষার পূর্বতন এমএলএ নিমাই সরকার ,এডভোকেট,অম্বিকা রায়,প্শ্চিম বঙ্গ, আসাম, ত্রিপুরা সহ বিভিন্ন রাদ্যের নেতৃবৃন্দ লাগাতার আন্দোলনের ডাক দেন।দেশ জুড়ে দলিত হত্যার প্রতিবাদ করেন।2003 সালের নাগরিকত্ব সংশোধনী কালো আইন অবিলম্বে বাতিল
করারা দাবি জানান।সংরক্ষণ ও মাতৃবাষার দাবি তোলেন।
লোককবি অসীম সরকার সর্বধর্ম ভ্রাতৃত্বের কথা বলে ধর্মনিরপেক্ষ ও প্রগতিশীল মানবতাবাদের পক্ষে কবিগানও পরিবেশন করেন।
ঔ অবস্থানে সমবেত হাজারো মানুষ প্রতিজ্ঞা করেন,বাংলাভাগের বলি মানুষদের নিরাপত্তা,নাগরিকত্বের জন্য প্রয়োজনে আন্দোলনের পথে প্রাণ দিতে হলে তাঁরা দেবেন।
ড.সুবোধ বিশ্বাস সুন্দরবনে অধিবাসি নারী পুরুষদের,বিশষত- বিধবা পল্লী ও উদ্বাস্তু কলোনীর মানুষদের নাগরিকত্ব,নাগরিক অধিকার ও মানব অধিকারের পক্ষে সমন্ভয় সমিতির আন্দোলনের কথা হাজারো মা বোনেদের উলুধ্বনি ও মতুয়াদের জয় ডন্কার জয়ঘোষের মধ্যে ঘোষণা করেন।
পশ্চিম বাংলার নাম বদলে বাংলা বা বঙ্গ করে দিলেই ইতিহাস ও ভূগোলের রক্তক্ষরণ থামছে না,বাস্তুহারা মানুষের সমাজ বাস্তব পাল্টাচ্ছে না।ভারতভাগের বলি বাংলা।রেলধারে বিলধারে খাল ধারে পোকা মাকড়ের মত যে কোটি কোটি মানুষ বসবাস করেন,শরণার্থী শিবিরের আসেপাশে,জবরদখল কলোনিতে যারা কোনো ক্রমে বেঁচে বর্তে আছেন,বাংলায় তাঁদের পরিচিতি আত্মপরিচয় আত্মসম্মান জীবন জীবিকা সবকিছুই প্রশ্নের মুখে।
পুনর্বাসন প্রহসনে জলে জঙ্গলে দ্পীপে দ্পীপান্তরে চাবাগানে কফি বাগানে যে পাঁছ কোটি উদ্বাস্তু বাঙালিরা ছড়িয়ে ছিটিয় বেঁচে আছেন মরিচঝাঁপি উত্তর কালে এবং 1971 পর যাদের পুনর্বাসন হয়নি,যারা এই সভ্যতার যাবতীয় শ্রমের শ্রমিক তাদের সংখ্যা বাস্তবে বাংলার জনসংখ্যারও কয়েক গুণ বেশি।
যে বাংলার স্মৃতি মুছে দেবার শাসকের নবীনতম উদ্যোগ,সেই বাংলাতেও এই সমস্ত হিন্দু উদ্বাস্তুদের রক্তে মাংসে গড়া মানুষের সংখ্যা আড়াই কোটি।যাদের বিরুদ্ধে ইসলামি সন্ত্রাসবাদীদের দখলে সিরিয়ার মত মৌলবাদের কেন্দ্র হয়ে ওঠা বাংলাদেশে রোজ রোজ অবাধ হত্যালীলা চলছে,ধর্ষণ ও বেদখলী,উত্পীড়ন জারি।
সেই সমস্ত মানুষদের সমিমিলিত কন্ঠস্বরে মতুয়াদের জয়ডন্কা,হাজার হাজার মহিলাদের উলুধ্বনি,কবিগানে উত্তাল করে দিল কোলকাতা,অথচ কোলকাতার রাজপথ কাঁপানো হাজারো উদ্বাস্তুদের এই মিছিলিরে খবর টিভির পর্দায় দেখা গেল না,বা দৈনিক যুগশঙ্খ ছাড়া কোনো কাগজে খবর হল না।
বাংলাদেশ যে সন্ত্রীস ধর্মের নামে জাযজ,রাজধর্ম,রাজনীতি,জেহাদ,সেইসন্ত্রাসের কবলে অন্ধ্র উপকুল থেকে নিগ্রোইড নৃজাতির দক্ষিণ এশিয়ার সমস্তভূগোল জুড়ে,তাঁরা সবাই বংগজ এবং হাজার হাজার বছর ধরে তাণরা সবাই বৃহত্তর বঙ্গের অধিবাসী,যার কেন্দ্রে ছিল গৌড় এবং বঙ্গ বললে সেই পূর্ব বঙ্গের হারানো শত পুরুষ নারী প্রজন্মের বেদখল ভিটে -তাঁর স্মৃতি যারা মুছে দিতে চায়,তাঁগের দৃষ্টিতে পশ্চিমবঙ্গ বাদে এি বৃহত্তর ইতিহাস ও ভূগোলের কৃষিজীবী মানুষরা প্রকৃত অর্থে নামানুষ,বেনাগরিক।
ভারত ভাগের সময়শাসক শ্রেণী এদের কথা ভাবেনি।ভারতভাগের পর এদের নাগরিকত্বের দাবি তোলে নি।2003 সালের নাগরিকত্ব হনন আইনের পিছনেও তাঁদেরই কালো হাত।
শিয়ালদহ থেকে মিছিল শুরু হয়ে 8000 লোকের ঢল কোলকাতায় রাজপথ কাঁপিয়ে Y Chanel এ পৌছালো। তিন কিলোমিটার লম্বা লাইন হয়ে মিছিল পৌছায় Y Chanel. বাংলাদেশ ডেপুটি হাই কমিশনার কে ডেপুটেশন দেওয়া হয়।
উজানতলীর লেখক কপিল কৃষ্ণ ঠাকুর লিখেছেনঃ
আনন্দবাজার পত্রিকায় (৫ আগস্ট) সন্ত্রাসের মোকাবিলা প্রসঙ্গে চমৎকার একটি কথা বলেছেন কাজী আনিস আহমেদ।তিনি লিখেছেন :'আমাদের অবশ্যই কঠোর নজর দিতে হবে – কী ভাবে নিজেদের ও অন্যদের সম্পর্কে কথা বলব?'মন্তব্যটি গভীর ভাবে বিবেচনার জন্য আমাদের গ্রহণ করা উচিত। কথাবলা একটি শিল্প, যার মাধ্যমে মানুষকে সম্মোহিত যেমন করা যায়, তেমনি, বিপরীত ক্রিয়ায় তা দিয়ে বন্ধুকেও শত্রুতে রূপান্তরিত করা যায়; যা আত্মধ্বংসেরই নামান্তর। প্রবাদে পাই – জিহ্বাই মানুষের পরম শত্রু। জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় কত সম্পর্কের অকালমৃত্যু হলো। কথাটা শুধু বন্ধুমহল বা পরিবারের ক্ষেত্রে নয়, প্রতিবেশী তথা সমাজ এবং রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেও সত্য। অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কথাবলার বিশিষ্ট ভঙ্গি ও বাকরীতি রপ্ত না হলে ব্যক্তি বা সমাজ সংস্কারের চেষ্টাও বৃথা হয়।ফলে বিপরীত ফল। সুতরাং, সমাজ বা অন্যকে বদলাবার ভাবনা থাকলে আগে নিজেকে বদলাতে হবে।